প্রেমের টানে সংসার ত্যাগী খাদিজা খুন হলো প্রেমিক পুরুষ জুবেল শিকদারের বড় ভাই জাহিদের হাতে।
শেখ ফসিয়ার রহমান, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি!!
নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার ঐতিহ্য বাহী পেড়লী গ্রামের খানকা পাড়ায় পরকিয়া প্রেমের টানে সদ্য বিবাহিত ( কথিত) প্রেম সম্রাগী নামে পরিচিত খাদিজা বেগম (২৫) দুই সন্তানের জননী এক নারী খুন হয়েছে ।
সোমবার ( ২৩ ডিসেম্বর ) সকালে কালিয়া থানাধীন পেড়লী ইউনিয়নের পেড়লী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে ।
নিহত খাদিজা বেগম যশোহর জেলার অভয়নগর থানার হিদিয়া গ্রামের আবদুল্লাহ মোল্লার মেয়ে গত ১১ বছর পূর্বে কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামের খানকা পাড়ায় রমিজ সিকদারেরসাথে সামজিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার করা কালে তাদের ৯ বছরের একটি ছেলে ও ৬ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামী সংসার তার ভাল লাগছিল না ফলে সে একাধিক পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধূ খাদিজা বেগম বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর ঘটনা নতুন কিছু নয়,এর আগেও বেশ কয়েকবার তিনি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন কালে আপত্তিকর অবস্থায় এলাকাবাসির কাছে ধরা পড়েন। দুই সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে এলাকাবাসির অনুরোধে স্বামী রমিজুল স্ত্রী খাদিজা বেগম কে ক্ষমা করেন। কিন্তু আবার ও স্বামী রমিজুলের অগোচরে দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী খাদিজা বেগম একই গ্রামে বসবাসরত রমিজুলের চাচতো ভাই জুবেল শিকদার (১৯) এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় স্বামী রমিজুলের অনুমতি ছাড়া এবং তাকে তালাক না দিয়েই কোন এক সুযোগে জুবেল ও খাদিজা বেগম কলেমা পড়ে মৌখিক বিয়ে করেন বলে দাবি করেন জুবেল শিকদার । এরই প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার ( ২২ নভেম্বর ) মধ্য রাতে জুবেল শিকদার, মিঠু ফকির ,মুসলিমা বেগম,( মহিলা মেম্বার) রমিজুল ইসলামের বাড়ি উপস্থিত হয়ে তাকে বলে জুবেল ও খাদিজার বিয়ে হয়ে গেছে সে এখন আর তোমার স্ত্রী না তাই তুমি তাকে আর তোমার বাড়িতে নিজের স্ত্রী হিসাবে রাখতে পারবা না, খাদিজাকে আমাদের সাথে যেতে দাও। রমিজুল ইসলাম তার স্ত্রীকে তাদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। রমিজুল তার পিতাসহ এলাকার অন্যান্য লোকজনকে ডাকার জন্য তার নিজের বাড়ি থেকে বের হলে,জুবেল শিকদার,মিঠু ফকির ,ও মুসলিমা বেগম ভিকটিম খাদিজা বেগমের হাত ধরে রমিজুল শিকদারের বাড়ি থেকে জুবেল শিকদার এর বাড়িতে নিয়ে চলে যায়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে বেশ সমালোচনা হয় । এক পর্যায়ে গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর ) সকাল আনুমানিক ১০টার সময় জুবেল শিকদারের বড় ভাই রঙ মিস্ত্রি জাহিদ শিকদার ( ২৫ ) এর সাথে খাদিজা বেগমের কথাকাটাকাটি হয়। জাহিদ বলে “তুইএকটা সংসার ভেঙ্গে আমার ভাইয়ের সংসারে আসছিস, তুই যে আমার ভাইয়ের সংসার নষ্ট করবিনা তার কি গ্যারান্টি আছে?” । বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে জাহিদ শিকদার তালের লাঠি দিয়ে খাদিজা বেগমের মাথায় আঘাত করলে সে মারাত্নকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। গ্রামবাসী তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় পেড়লী বাজারে অরবিন্দু ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়।রোগীর অবস্থা শংকাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার (২৫ ডিসেম্বর ) সকাল সাড়ে ১১ টায় আহত খাদিজা বেগম মৃত্যুবরণ করেন ।
স্বরজমিনে সাংবাদিকগণ অভিযুক্ত জাহিদ শিকদারের বাড়িতে গেলে তাদের কাউকেই সেখানে পাওয়া যায় না। খাদিজার মৃত্যুর খবর জানতে পেরে জুবেল শিকদাররা বাড়ি ঘর ফেলে রেখে আত্মগোপন করেছে বলে সাংবাদিকদের জানান এলাকাবাসী ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পেড়লী পুলিশ ফাড়ির এস আই আজিজুর রহমান বলেন, “পেড়লী গ্রামে খাদিজা বেগম নামে একজন নারী তালের লাঠির আঘাতে নিহত হয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত তালের লাঠি উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। কালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান নিহতের পিতা আব্দুল্লাহ মোল্লা বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে থানা একটি মামলা দায়ের করেছে, মামলা নাম্বার ২১/২৪ তারিখ ২৭,১২,২০২৪ ধারা ৩০২, এবংএজাহারে উল্লেখিত মুসলিমা নামের একজন আসামি কে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে”# ।