ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালীন ,স্বৈরচারীদের গুলিতে নিহত সরিষাবাড়ীর শহীদ রাব্বি’র মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন হলোনা
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধিঃ
২০২৪ ইং সালে জুলাই-আগষ্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনকালীন ,স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার সাধারন ছাত্র-ছাত্রী ও জনতার উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হুকুম ও নির্দেশ দানের গুলিতে জামালপুরের সরিষাবাড়ী’র মেধাবী ছাত্র শহীদ কামরুল ইসলাম ওরফে রাবিব’র মৃত্যু হয়। ওই নিহত রাব্বি’র কবরস্থাানের কবর থেকে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য উত্তোলন করা হলোনা। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পঞ্চাশী নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নিহতের পরিবারের আপত্তির কারেনে নিহত রাব্বী’র কবরস্থানের কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনে করতে পারেনি নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার ও মরদেহ উত্তোলন করতে যাওয়া দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যাক্তি সুত্রে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচী চলাকালীন গত ২০২৪ ইং সালের ২০ জুলাই তারিখের বিকাল সাড়ে ৫টার সময় নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগজ্ঞ থানার ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রিয়ম নিবাসের পাশে খুসবো ভবনের ৪র্থ তলার বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলেন কামরুল ইসলাম ওরফে রাব্বি (২২)। এ সময় তার বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হন।পরে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলেও মৃত্যুবরণ করেন। পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় পোষ্টমর্টেম ছাড়াই ২১ জুলাই সকাল ১১টায় তাকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পঞ্চাশী নয়াপাড়া গ্রামে সামাজিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়।
নিহত রাব্বি’র গ্রামের বাড়ী’র সামাজিক কবরস্থানের কবর হতে লাশ উত্তোলন করে ময়নাদতন্তের জন্য আদালতে অনুমতির আবেদন করলে আদালত ২০২৪ ইং সালের ২২ অক্টোবর তারিখে নারায়গঞ্জের সিনিয়র জুডিমিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটএর আমলি আদালত-৮ নিহতের মৃত্যুর সঠিক কারণ, মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও নায় বিচারের স্বার্থে মৃত রাব্বি মিয়া’র লাশ উত্তোলন পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য অনুমতি প্রদান করেন।
উক্ত আদালতের আদেশ মোতাবেক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে সরিষাবাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিজা রিছিল ,নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই ও রাব্বী’র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজী মাহতাব উদ্দিন , পুলিশ সদস্য সোহাগ মিয়া এবং তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ নিহতের মরদেহ কবরস্থানের কবর থেকে উত্তোলন করার জন্য সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় নিহত রাব্বী’র কবরস্থানের কবর থেকে রাব্বী’র মরদেহ উত্তোলনে রাব্বি’র পিতা- আব্দুর রহিম ও বড় ভাই অন্তর মিয়া আপত্তি জানান। পরে নিহত রাব্বি’র মরদেহ কবরস্থানের কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন না করে ফিরে যান তারা।
এ সময় নিহত রাব্বি’র বড় ভাই মামলার বাদী অন্তর মিয়া, রাব্বির পিতা রহিম মিয়া, স্থানীয় সমাজ সেবক আবুল হোসেন, সুরুজ মিয়া, জহির উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল হাই, রাব্বি’র বন্ধু মনিরুজ্জামান মানিক সহ আত্নীয়-স্বজন এবং এলাকার গণ্য মান্য ব্যাক্তিবর্গ ও গণমাধ্যম কর্মীগন উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই ও রাব্বী’র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজী মাহতাব উদ্দিন জানান, নিহত রাব্বি’র হত্যা মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও নায় বিচারের স্বার্থে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করার জন্য নারয়নগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৮ এর নির্দেশে নিহত রাব্বি’র কবরস্থানে তার মরদেহ তুলতে যাই। সেখানে নিহত রাব্বি’র পরিবারের পক্ষ থেকে কবরস্থানের কবর থেকে রাব্বি’র মরদেহ উত্তোলনে আপত্তি জানান। তাই নিহতের লাশ উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ যে গুলিতে নিহত রাব্বি মিয়া (২২)এর বড় ভাই অন্তর মিয়া বাদী হয়ে নারায়নগঞ্জের এ কে এম শামীম ওসমান কে প্রধান আসামী করে ৬৯জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১৫০/২০০ অজ্ঞাতনামা আসামী করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বে- আইনী জনতা বদ্ধে মারাত্বক অস্ত্রে -সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হুকুমদাতার হুকুমে গুলি করে হত্যা, ককটেল বিস্ফোরণ ঘাঁনো ও সহায়তা করার অভিযোগে এনে নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগজ্ঞ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়টি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগজ্ঞ থানার এস.আই গাজী মাহতাব উদ্দিন নিশ্চিত করেন। যার মামলা নং ১৭ (১১/০৯/২০২৪ ইং)।