ভেড়ামারায় ভগিরদহ জলমহলের ইজারা পেয়েও দখল পাচ্ছেন না ইজারাদার কামরুজ্জামান।।
স্টাফ রিপোর্টার কুষ্টিয়া।
সরকারী কোষাগারে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা জমা দিয়ে বিধি মোতাবেক ইজারা পেয়েও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার ভগিরদহ জলমহলের ইজারা পাচ্ছেন না ইজারাদার কামরুজ্জামান। দখল বুঝে পেতে দেড় মাস ধরে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তিনি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন তিনি।
গত ৭ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলা জলমহল ও সায়রাত মহল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা ও বিভাগীয় কমিশনার খুলনার অনুমোদনের প্রেক্ষিতে ভেড়ামারার ধরমপুরে ভগিরদহ জলমহলের ইজারা প্রাপ্ত হন ভেড়ামারা উপজেলার মওলাহাবাসপুর গ্রামের জামাত আলীর পুত্র কামরুজ্জামান। এ জন্য তিনি সরকারী কোষাগারে ইজারা মূল্য হিসাবে ৩০ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, ভ্যাট হিসাবে ৪ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা, আয়কর হিসাবে ৩ লক্ষ ২ হাজার টাকা সহ মোট ৩৭ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা জমা দেন। এর প্রেক্ষিতে বাংলা ১৪৩২ সনের ০১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত ১ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। কুষ্টিয়া জেলার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মুমতাহিনা পৃথুলা স্বাক্ষরিত ০৫.৪৪.৫০০০.০০৫.৫৫.০০১.২৪-৪৬১ নং স্বারকে ভেড়ামারার জনসেবা মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি ইজারদার কামরুজ্জামান কে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু জলমহল দখল বুঝে পান নি বা সরকারী ভাবে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় নি। প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে তিনি এখন মহাবিপাকে। জলমহল বুঝে পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তিনি।
এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় মওলাহাবাসপুর ভগিরদহ জলমহলের সামনে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ ইজারাদার এবং মৎস্যচাষীরা। সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের আমলে ভগিরদহ জলমহল দখলে নেয় ধরমপুরের যুবলীগ নেতা আব্দুল আজীজ। ৫ অগাষ্টের পর আওয়ামীলীগ সরকার পালিয়ে গেলে যুবলীগ নেতা আব্দুল আজীজও পালিয়ে যায়। এরপর রাতারাতি জলমহল দখলে নেয় ধরমপুরের আসাদুজ্জামান মিঠু, রবিউল সরকার সহ প্রভাবশালীরা। তারাই এখনো দখল করে রেখেছে ভগিরদহ জলমহল।
জলমহলের ইজারাদারের সহযোগী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ¦ শামসুল হক জানিয়েছেন, সরকারী বিধি মোতাবেক সকল নিয়ম মেনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা জমা দিয়ে আমরা ভগিরদহ জলমহলের ইজারা নিয়েছি। কিন্তু দখল পায় নি। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ পালিয়ে যাওয়ার পর রবিউল সরকার সহ যারা জোর জবর দখল করে জলমহল খেতে ছিল, তারাই এখনো দখল করে রেখেছে। আমরা ইজারা পেয়েও তারা দখল ছাড়ছে না। আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় আছি। তারা যে কামরুলের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকায় ষ্ট্যাম মুলে দখলে ছিল, সেই মেয়াদ গত চৈত্র মাসে শেষ হয়ে গেছে। এখন আমাদের জলমহল। তিনি সরকারী সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান মিঠু জানিয়েছেন, ইজারাদার কামরুলের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা দিয়ে আমরা ভগিরদহ জলমহলের মালিক হয়। চৈত্র মাসেই মাছ মেরে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পানি বেশি থাকায় আমরা মাছ সংগ্রহ করতে পারেনি। আমরা কর্তৃপক্ষের নিকট আগামী ৩ মাস সময় প্রার্থনা করছি। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে মাছ সংগ্রহ করে জলমহল ছেড়ে দেবো। এই মুহুর্তে জলমহল ছেড়ে দিলে আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হবো।