কোলকাতা ইসকনের ৫৪ তম রথযাত্রা উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন করলেন
রিপোর্টার , সমরেশ রায় ও শম্পা দাস , কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ,
আজ ২৪ শে জুন মঙ্গলবার, দুপুর একটায়, গুরুসদয় রোড স্থিত, ইসকনের বাসভবনের অডিটোরিয়ামে, ২৭ শে জুন ৫৪তম রথযাত্রা উপলক্ষে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করলেন ও বিশ্বব্যাপী ঐক্যের এক ঐকান্তিক আহ্বান জানালেন।
অন্যান্য বারের মতো এবারে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের শুভ সূচনা হওয়ায় ,মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইসকনের রথে ২৭শে জুন না থাকতে পারায় তিনি ৩রা জুলাই ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে উপস্থিত থাকবেন। তবে এবারের রথের শুভ সূচনা করবেন অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। ইসকন কলকাতার উদ্যোগে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে চলবে সাত দিন ধরে রথযাত্রার উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
তবে এবারের রথযাত্রায় ইসকনের বেশ কয়েকটি পরিবর্তন হয়েছে।, মেলায় তৈরি হচ্ছে পুরীর মন্দিরের আদলে প্যান্ডেল, জগন্নাথ দেবের রথে যে বোয়িং ৭৪৭ বিমানের চারটি চাকা লাগানো ছিল, সেইগুলি এই বছর ফেলে, সুখোয় 30 যুদ্ধবিমানের নতুন চাকা লাগানো হচ্ছে। প্রায় ৫০ বছর বাদে boeing 747 বিমানের চাকা অবসর নিলেন, এই চাকা গুলিকে রাখা হবে নিউ টাউনে জগন্নাথ মিউজিয়ামে।
এবারে কলকাতার বুকে জগন্নাথের রথ টেনে নিয়ে চলবে এবং মনে করিয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর যতই যুদ্ধের জন্য প্রযুক্তি নেই প্রকৃত শক্তি আছে ভগবানের প্রতি আত্মসমর্পণ ও শান্তির বাণী প্রচারের মাধ্যমেই। এছাড়াও একটি সাইট চালু করেছেন, যেখানে ক্লিক করলে দেখা যাবে রথের দিন জগন্নাথ কোথায় আছে কত দূরে আছে।
আজকের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রাধারমন দাস, বলরাম চৈতন্য মহাপ্রভু সহ। তবে দীঘায় পুরীর মন্দির শুভ সূচনা হওয়ার ফলে যিনি ইসকনের উদ্যোক্তা রাধারমন বাবু থাকতে পারছেন না বলে জানিয়ে দেন। তিনি দীঘায় উপস্থিত থাকবেন।
২৭ শে জুন , সকাল থেকেই চলবে, পূজার্চনা, তারপর দুপুর একটা নাগাদ শুরু হবে রথের দড়িতে টান, জগন্নাথ সুভদ্রা ও বলরাম কে নিয়ে , জয়ধ্বনি দিতে দিতে ভক্তদের সমাগমে, রথ এগিয়ে চলবে ইসকন মন্দির থেকে ৩সি অ্যালবার্ট রোড, হাঙ্গারফোর্ট স্টিট, এ জে সি বোস রোড, হাজরা রোড, এস পি এম রোড। এ টি এম রোড, চৌরঙ্গী রোড, এক্সাইড ক্রসিং হয়ে আউট টার্ম রোড দিয়ে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রবেশ করবেন, জ্বলবি আঠাশে জুন থেকে ৪ঠা জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পর, ৫ই জুলাই মাসির বাড়ি থেকে রওনা দেবেন।
আপনারা বলেন বিশ্বজুড়ে ১৫০ টিরও বেশি দেশে চার হাজারেরও বেশি স্থানে রথযাত্রা পালিত হবে, যা সম্ভব হয়েছে ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য কৃষ্ণ কৃপাশ্রীমূর্তি শ্রীল অভয়চরণাবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায়। প্রতিটি শহরে জগন্নাথের রথ পরিভ্রমণ করবে।
কুড়ির পরেই কলকাতার ইসকনের রথ মানুষের মন জয় করে নিয়েছে আগের বছর প্রায় কুড়ি লক্ষেরও বেশি ভক্তদের সমাগম হয়েছিল, এই বছর আমরা আশা করছি ২২ লক্ষেরও বেশি ভক্ত উপস্থিত হবেন বিভিন্ন দেশ থেকে। মেলায় চলবে প্রসাদ বিতরণ, নৃত্য, জগন্নাথের জয়ধ্বনি, শিশুদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, কীর্তন, ডজন খানেক মৃদঙ্গ, প্রতিদিন তিনটে ত্রিশ থেকে রাত ৮ঃ৩০ পর্যন্ত পরিবেশন হবে খিচুরি প্রসাদ।,
তবে একটা কথা বলেন এবারে যেহেতু দীঘায় প্রথম রথযাত্রা পালিত হচ্ছে, তিনি অনুমান করেছেন দীঘার রথযাত্রার দিন আনুমানিক দু'লক্ষ লোক হবে। সেই মতোই সমস্ত ব্যবস্থা করেছেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাহাতে কোন রকম বৃশিঙ্খলা না ঘটে।
ইসকনে জগন্নাথ দেবের রথের উচ্চতা আটত্রিশ ফুট, ভাঁজ করা যায় ছাউনি, বলরাম জিও পথের উচ্চতা 36 ফুট, এবং সুভদ্রা দেবী রথ তিনটির মধ্যে সবচেয়ে ছোট ভাঁজ করা যায় এমন ডিজাইন মজবুত ও লোহার চাকা।
চলছে পুরোদমে রথে ও চাকায় রং ও কারুকার্য, রাধারমন দাস বাবু চাকায় তুলির টান দিয়ে আগামী দিনের বার্তা জানালেন।
সাংবাদিক মোঃ মিন্টু মিয়া কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত