মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি দালালের খুঁটি বাণিজ্য, অনিয়মে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
মোঃ আব্দুল হামিদ মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
নিয়মকে অনিয়মে পরিণত করে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে টাকা জমা না দিয়েই মাঠের মটর লাইনের জন্য আটটি খুঁটি (পোল) ও তার টাঙ্গানোর অভিযোগ উঠেছে, মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের যোগসাজশে দালাল চক্রের সদস্যরা এমন অভিনব ঘটনা ঘটিয়েছে, তবে দায়ভার নিতে নারাজ উভয়পক্ষ, বিপাকে পড়েছে মটর লাইনের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ প্রত্যাশীরা।
অভিযোগ রয়েছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার করমদি মাঠপাড়ায় টাওয়ারের মাঠে সেচ কাজে ব্যবহৃত মটরের বিদ্যুৎ লাইনের জন্য স্থানীয় দালাল ইমারুল, খোকন ও ঠিকাদার মোজাম্মেলকে মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন করমদি গ্রামের সাহাদুল ও মিলন,দু'জনকে মটরের বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য দালালদের এখন পর্যন্ত পৃথকভাবে দিতে হয়েছে সর্বমোট ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা, পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সংযোগ দিবে দালালেরা! কথা ছিল আরো কয়েক লাখ টাকা দিতে হবে তখন,
সরোজমিনে দেখে যায়, করমদির ঐ মাঠে ৩ মাস আগে আটটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার টাঙ্গানো হয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত টাকা জমা দেওয়া হয়নি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে, প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে ওই আটটি খুঁটি ও বৈদ্যুতিক তার চুরি করা হয়েছে কিনা? না হলে কাজের অনুমতির আগে কিভাবে সিংহভাগ কাজ শেষ হয়ে যায়! পল্লী বিদ্যুতের অনুমতি ছাড়া ঠিকাদার কিভাবে খুঁটি স্থাপন ও তার টাঙ্গাতে পারে।
করমদি গ্রামের সাহাদুল ইসলাম বলেন,পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের দালাল ইসলামপুর গ্রামের ইমারুলকে আমি মটরের কাজের জন্য বছর দেড়েক আগে ২ লাখ টাকা দিয়েছি, মাস তিনেক হচ্ছে খাম্বা পোতা হয়েছে,আমার আর মিলনের একই বিদ্যুৎ লাইনে কাজ হয়েছে, আমার মটর আগে তারপর মিলনের মটর।
একই গ্রামের মিলন হোসেন বলেন,আমি দেবিপুর গ্রামের দালাল খোকনের মাধ্যমে ঠিকাদার মোজাম্মেলকে ৪ লাখ টাকা দিয়েছি,এখন শুনছি আমাদের টাকা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা হয়নি! অবৈধভাবে সংযোগের কাজ হয়েছে, মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বামন্দী সাবজোনাল অফিসের মাধ্যমে কাজটি হওয়ার কথা ছিল,তিনি দাবি করেন, ৪ লাখ টাকা দিলেও মোজাম্মেলকে ভালোমতো চিনেনা।
এদিকে দালালেরা বিষয়টি অস্বীকার করে দোষারোপ করছেন একে অপরকে, ইমারুল ইসলাম বলেন, কাজটি তিনি না খোকন করছে, আর খোকনের দাবি, সে কিছুই জানে না! কাজটি করছে ইমারুল আর মোজাম্মেল।
ঠিকাদার মোজাম্মেল হোসেন বলেন,আমি খুলনায় আছি, বিষয়টি মনে নেই! খোঁজ নিয়ে পরে জানাতে পারব।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিনামূল্যে সরবরাহের ট্রান্সফার দালাল দিয়ে বিক্রি, অবৈধ সংযোগ, খুঁটি স্থাপনে অনিয়ম, ভুয়া বিদ্যুৎ বিল তৈরি করে ঘুষ বাণিজ্যসহ নানাভাবে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বামন্দী সাবজোনাল অফিসের মাধ্যমে দালাল চক্র ব্যবহার করে সমিতির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) পর্যন্ত অসাধু উপায়ে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
বামন্দী সাব জোনাল অফিসের এজিএম (ওএন্ডএম) সৌমিক নাসের বলেন,করমদির কাজটির পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কোন অনুমোদন হয়নি,টাকা জমা দেওয়ার আগে লাইন টানা হয়েছে, নিয়মমাফিক টাকা জমা দেওয়ার পর ঠিকাদার সিলেকশন করে কাজ দেওয়া হয়, কিন্তু এই কাজে টাকা জমা না দিয়েই সবকিছু কিভাবে হয়েছে সেটার তদন্ত চলছে।
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার স্বদেশ কুমার ঘোষ বলেন, তদন্ত চলমান রয়েছে! তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কিছু বলা যাবে না।
সাংবাদিক মোঃ মিন্টু মিয়া কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত