সরিষাবাড়ীতে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা অভিযোগ

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি : জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সুলতান মিয়া (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তার স্ত্রী জোছনা বেগম (৪০) বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ১১টায় কামরাবাদ ইউনিয়নের ধারাবর্ষা এলাকার জমসের বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জোছনা বেগমের স্বামী সুলতান এবং প্রতিপক্ষ দীন ইসলাম, লাভলু মিয়া, মিষ্টার, বাবলু মিয়া ও রাশেদুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে দুপক্ষের মধ্যে ও জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

জানা যায়, সুলতান মিয়া গত (৩ অক্টোবর) ২০২৩ইং তারিখে ৪০৫৩/২০২৩ নং সাব-কবলা দলিল মূলে প্রতিপক্ষ তার মায়ের নিকট থেকে ১.৬১ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরে এই জমি দখলের চেষ্টা করলে অপর ভিন্নভাবে বাধা দেয় এবং প্রকাশ্যে জমির দখল নিতে দিবেনা বলে চ্যালেঞ্জ করে।

এমতাবস্থায় বিষয়টি নিরসনের লক্ষ্যে সুলতান মিয়া জামালপুর আমলী আদালতে সি.আর কোর্টে একটি মামলা (মামলা নং-১৩০/১) দায়ের করেন। আদালত মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিজ্ঞ জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে প্রেরণ করেন। লিগ্যাল এইড উভয় পক্ষকে জানায় যে, আগামী (৩০ জুন) সরেজমিনে তদন্ত করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে।

এরইমধ্যে প্রতিপক্ষ দীন মোহাম্মদ বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসে তার নেতৃত্বে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সুলতান মিয়া কে স্থানীয় জমসের বাজারে গেলে ৫/৭ জন লোক মিলে ঘিরে ফেলে। এ সময় সুলতান মিয়াকে বুকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয় লাভলু এবং হত্যার উদ্দেশ্যে দুই হাত দিয়ে গলা চেপে ধরে দীন মোহাম্মদ। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

মামলার বাদী জোছনা বেগম জানান, বিবাদীরা তার স্বামীকে মারধর করার পর এখন ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের হুমকি দিচ্ছে। তারা বলে বেড়াচ্ছে যে, বাদীকে মামলা মোকদ্দমায় সহায়তা করলে তাদের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হবে না এবং গুম, খুন ও বিভিন্ন ধরনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। বর্তমানে এই ঘটনায় স্থানীয় জনমনে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জমি বিক্রেতা ও দাতা সাহানা বেগমের কাছে এ বিষয়ে জানতে গেলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তার ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া যায় এবং তার মোবাইল না থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, সাহানা বেগমের স্বামী নূরুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর তার সন্তানেরা তাকে অবহেলা ও অযত্নে রাখতেন এবং প্রতিনিয়ত ঝগড়া করতেন। পরে গ্রামবাসী শান্তির লক্ষ্যে নূরুল ইসলামের সমস্ত সম্পদ হিস্যা অনুযায়ী স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে বন্টন করে দেন। সেই বন্টনের অংশ শাহানা বেগম খারিজ করে সুলতানের কাছে বিক্রি করেন, যা নিয়ে সুলতানের সাথে শাহানা বেগমের সন্তানদের বিবাদের সূত্রপাত হয়।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুল হাসান রাশেদ বলেন, "এ সংক্রান্ত দুটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।