ময়মনসিংহে ‘জুলাই চত্বর’ ঘোষণা, শহীদদের স্মরণে নতুন চেতনার মঞ্চ
আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে ইতিহাসখ্যাত ময়মনসিংহের টাউন হল সড়ক দ্বীপকে ‘জুলাই চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সোমবার (১৪ জুলাই ২০২৫) দুপুর ১২টায় বেলুন উড়িয়ে ও ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার আহমেদ।
ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোখতার আহমেদ বলেন, এই জায়গা থেকেই জুলাই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। তাই এটিকে জুলাই চত্বর হিসেবে ঘোষণা করছি। এখন থেকে এটি হবে আমাদের চেতনা ও শক্তির উৎস। যেকোনো অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে, আমরা এই চত্বর থেকেই তা প্রতিহত করব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শহীদদের স্মরণে নীরবতা পালন ও বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ মুফিদুল আলম, পুলিশ সুপার কাজী আকতার উল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, শহীদ রোদোয়ান সাগরের পিতা মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দুই পাশে পৃথক সাইনবোর্ডে “জুলাই চত্বর” লেখা হয়েছে। গোল চত্বরে স্থাপিত ম্যুরালে রয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের প্রতিকৃতি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মোঃ আশিকুর রহমান বলেন, “ময়মনসিংহে জুলাই আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল এ টাউন হল থেকে। আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই ঐতিহাসিক স্থানে ‘জুলাই চত্বর’ ঘোষণা হয়েছে, এটি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ।
তবে এনসিপির জেলা কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘোষণাটি আরও পরিকল্পিতভাবে হওয়া উচিত ছিল। শহীদদের স্মৃতি যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে বিষয়ে যত্নশীল থাকা জরুরি।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোঃ মুফিদুল আলম জানান, এই স্থান থেকেই ছাত্র আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। তাই এটি ‘জুলাই চত্বর’ করা হয়েছে। তবে অবকাঠামোগত কোনো পরিবর্তন হবে না। আর জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য ঢাকা বাইপাস এলাকায় জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৮৮৪ সালে ব্রহ্মপুত্র নদ সংলগ্ন সার্কিট হাউস মাঠের কাছে প্রতিষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক টাউন হল। এটি দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত।