মোমেনশাহী ডিএস কামিল মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, গ্রেপ্তার
আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মোমেনশাহী ডিএস কামিল মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের স্বাক্ষর জাল করে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট নিয়োগ এবং আর্থিক লেনদেন দেখিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক রশিদুল ইসলাম খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মোঃ ইদ্রিস খান এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী জেলার রামগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা রশিদুল ইসলাম খান (৪৩) দীর্ঘদিন ধরে মোমেনশাহী ডিএস কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছেন। এ সুযোগে তিনি বিভিন্ন সময় প্রতিষ্ঠানটির দাপ্তরিক কার্যক্রমে স্বাক্ষর জাল করে নিজের নামে অবৈধ আর্থিক সুবিধা আদায় করে আসছিলেন।
সম্প্রতি আরবি প্রভাষক মোঃ আব্দুর রউফ অভিযোগ করেন, তার স্বাক্ষর জাল করে রশিদুল ইসলাম তাকে চলতি পরীক্ষার জন্য অবৈধভাবে পরীক্ষক হিসেবে দেখান। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষ ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, গোপন নথিপত্র যাচাই করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
নথিপত্র অনুযায়ী, আব্দুর রউফ, মো. মোফাজ্জল হোসেন, শামসুল আলম, আব্দুল হাফিজ ও হারুনুর রশিদসহ অন্তত ১০-১২ জন শিক্ষকের নাম ও স্বাক্ষর জাল করে তিনি বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৫ লাখ ৩২ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করেন।
অধ্যক্ষের দাবি, গত ৮-৯ বছর ধরে রশিদুল ইসলাম এমন প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন, যার মাধ্যমে প্রায় ২০ লাখ টাকার সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অধ্যক্ষ জানান, লিখিত প্রমাণ, প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের সাক্ষ্য ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা নং ৪৮(৭)২০২৫, ধারা - ৪০৬/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৪ পেনাল কোড ১৮৬০ অনুযায়ী মামলা রুজু হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন এসআই মাসুদ জামালী। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত রশিদুল ইসলাম খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাকে যথাসময়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অভিভাবকদের মাঝে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তদন্ত শেষে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাংবাদিক মোঃ মিন্টু মিয়া কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত