অষ্টগ্রামে আদালতের আদেশ অমান্য করে পুনরায় দোকান দখলের অভিযোগ, ভুক্তভোগীর ক্ষোভ
অষ্টগ্রাম প্রতিনিধি //
অষ্টগ্রাম উপজেলার এক ব্যবসায়ী আদালতের ইনজেকশন আদেশ থাকা সত্ত্বেও নিজের ভাড়া দেওয়া দোকান বারবার দখলের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী মানিক বণিক জানান, দখলদাররা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা এবং আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তালা ভেঙে দোকান পুনরায় দখলে নিয়েছে।
ভুক্তভোগীর ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে প্রথম তার দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি যে দোকানটি ভাড়া দিয়েছিলেন, সেখান থেকে ভাড়াটিয়া জসিমকে জোরপূর্বক বের করে দোকানে তালা লাগিয়ে দখলের চেষ্টা চালায় একটি পক্ষ। ঘটনার পরপরই উক্ত ভুমির আরেকজন অংশীদার মোঃ হুমায়ুন আহমেদ বাজিতপুর আদালতে বাটোয়ারা মামলা দায়ের করেন এবং আদালত থেকে ইনজেকশন (স্থগিতাদেশ) আদেশ জারি হয়।
তবে আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও বিবাদীরা থেমে থাকেনি। ১৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে তারা আদালতের আদেশ অমান্য করে আবারও তালা ভেঙে দোকানটি দখল করে নেয়। বিষয়টি জানার পর মানিক বণিক অষ্টগ্রাম থানা এবং ইটনা সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে অষ্টগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ এবং সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে দখলদারদের দোকান থেকে বের করে দেন।
অভিযানে অংশগ্রহণকারী বাহিনী দোকানের দুইটি শাটারে তালা লাগিয়ে চাবি বুঝিয়ে দেন অষ্টগ্রাম বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হাসান ইয়ামিনের কাছে। সেই সময় জানিয়ে দেওয়া হয়, আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত দোকানে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।
তবে মানিক বণিক অভিযোগ করে বলেন, “বিবাদীদেরকে প্রশাসনের উপস্থিতিতে দোকান থেকে বের করে দেওয়ার পরও আবার রাতের আঁধারে তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে পুনরায় দোকান দখলে নেয়। এটা শুধু আদালতের আদেশ অমান্য নয়, বরং পুলিশ ও সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত যৌথ অভিযানেরও অবমাননা।”
বর্তমানে বিষয়টি বাজিতপুর আদালতে মামলা চলমান রয়েছে এবং ইনজেকশন আদেশ এখনো বলবৎ রয়েছে বলে জানান মানিক বণিক। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ দাবি করেছেন।
এবিষয়ে বিবাদী পক্ষের একজন মোঃ ওয়াজ উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দোকান আমরা আমাদের দখলে নিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা জোরপূর্বক আমাদের দোকানে অভিযান চালিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। তালা ভেঙে দোকানে প্রবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন, দোকান আমাদের তাই আমরা তালা ভেঙে দোকান আমাদের নিয়ন্ত্রণে এনেছি।
অষ্টগ্রাম বড় বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের হাসান ইয়ামিন এ প্রতিনিধিকে জানান, এই দোকান নিয়ে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় আঃ হেকিম গং দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করলে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তালা দিয়ে আমার কাছে চাবি জমা রাখে। কিন্তু উক্ত অভিযানের অবমাননা করে আঃ হেকিম গং তালা ভেঙে দোকান পুনরায় দখল করে আমি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এর তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি আইনের মাধ্যমে বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান প্রত্যাশা করছি।
এবিষয়ে অষ্টগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রুহুল আমিন মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান যৌথ বাহিনীর অভিযানে তালা দিয়ে আসার পর আঃ হেকিম গং তালা ভেঙে আবার দোকান দখল করার বিষয়টি আমি মৌখিক ভাবে অবগত হয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।