সাভারে অস্ত্র-গুলিসহ তিন সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার
সিনিয়র রিপোর্টার
মোঃ আসিফুজ্জামান আসিফ
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর গুলি চালিয়ে পালানো সেই দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন অবশেষে র্যাবের হাতে
দুই সহযোগীসহ গ্রেফতার, বিদেশী পিস্তল ও গুলি উদ্ধার
“বাংলাদেশ আমার অহংকার”—প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এই অঙ্গীকার বুকে ধারণ করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) দেশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, মাদকবিরোধী অভিযান এবং চাঞ্চল্যকর অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার কাজে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাবের ধারাবাহিক ও দৃঢ় পদক্ষেপের ফলেই বহু আলোচিত অপরাধী চক্র ভেঙে পড়েছে এবং সাধারণ মানুষের মাঝে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থা আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায়, ১৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখ গভীর রাতে র্যাব-৪ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন পাড়াগ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও একটি রাউন্ড গুলিসহ তিনজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন—
১. রাজিব হোসেন (৩৮)
২. মো. আল-আমিন (৩৮) – আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়া কুখ্যাত সন্ত্রাসী
৩. মো. জুয়েল মিয়া (৪৫)
অভিযান ও গ্রেফতারের নাটকীয় বর্ণনা
র্যাব-৪ সিপিসি-২, সাভার এবং এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৪ আগস্ট রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে সাভার থানার বালিয়ারপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মো. আল-আমিনকে গ্রেফতার করা হয়। একই সময়ে দেওয়ানবাড়ি এলাকা থেকে জুয়েল মিয়াকেও আটক করে র্যাব সদস্যরা।
পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়ার পাড়াগ্রামে পুনরায় অভিযান চালিয়ে রাজিব হোসেনকে বিদেশী পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলিসহ হাতেনাতে ধরা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়া আল-আমিনের গ্রেফতার র্যাবের জন্য ছিল একটি বড় সাফল্য। ইতোপূর্বে একাধিকবার তাকে আটক করতে অভিযান পরিচালিত হলেও সে কৌশলে পালিয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদক সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতরা স্বীকার করেছে, তারা একটি আন্তঃজেলা সন্ত্রাসী ও ডাকাতি চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে—
দেশি ও বিদেশি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনতাই
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ডাকাতি ও চাঁদাবাজি
নির্দিষ্ট বাড়িঘর চিহ্নিত করে ডাকাতি
মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে বাস, ট্রাক ও গার্মেন্টসপণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানে ডাকাতি
এছাড়া তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকা, পার্শ্ববর্তী জেলা ও মহাসড়কে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল।
গ্রেফতারকৃত তিনজনের বিরুদ্ধে সাভার ও আশুলিয়া থানায় ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।
র্যাব-৪ এর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান—
“আমরা সর্বদা সন্ত্রাস ও অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। ভবিষ্যতেও অবৈধ অস্ত্রধারী ও কুখ্যাত অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
এই অভিযানের মাধ্যমে শুধু একটি সন্ত্রাসী চক্রের গুরুত্বপূর্ণ তিন সদস্যকেই গ্রেফতার করা হয়নি, বরং অস্ত্রসহ ধরা পড়ায় সম্ভাব্য বড় ধরণের অপরাধও রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
সাংবাদিক মোঃ মিন্টু মিয়া কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত