তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
রফিকুল ইসলাম রফিক, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ,
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের সাদুয়া দামারহাট বগলা কুঁড়া এলাকায় তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই ২০২৫) দুপুরে কয়েক শত নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীরা এ মানববন্ধনে অংশ নেন।
গত কয়েক দিনে তিস্তা নদীর পানি বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে শত শত ঘরবাড়ি, আবাদি জমি ও বৃক্ষরাজি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে বহু পরিবার এখন অন্যের জমিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, “আমার বাড়িঘর ইতোমধ্যেই ছয়বার নদীতে ভেঙে গেছে। জমিজমাও নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন অন্যের জমিতে বাড়ি করে বসবাস করছি। আমরা কোনো ইলিশ ভর্তুকি চাই না, শুধু ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিলেই ছেলে-মেয়েদের নিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে পারতাম।”
এসময় ভাঙনকবলিত ছকিনা বেগম বলেন, “নদীর পাড়ে জিওব্যাগ থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। যদি দ্রুত জিওব্যাগ ফেলে বাঁধ নির্মাণ করা হয়, তবে আমরা অন্তত টিকে থাকার সুযোগ পাবো।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙন কবলিত স্থানের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সারি সারি বালু ভর্তি জিওব্যাগ মজুদ থাকলেও তা ডাম্পিং করা হচ্ছে না। মানববন্ধনে উপস্থিত উলিপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আব্দুস সোবহান ব্যাপারী বলেন, “তিস্তা নদী আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। অথচ ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। আমরা সরকারের কাছে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানাই।”
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, “যেখানে বাজেট আছে সেখানে কাজ চলছে। নতুন করে ভাঙন দেখা দেওয়া এলাকাগুলোতেও বাজেট সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে কাজ করা হবে।”
উল্লেখ্য, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে কুড়িগ্রামের উলিপুর, রাজারহাট, চিলমারীসহ বিভিন্ন উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়। এতে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ছে। এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ছাড়া তিস্তার ভাঙন রোধ সম্ভব নয়।
সাংবাদিক মোঃ মিন্টু মিয়া কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত