গফরগাঁওয়ে ২৫ স্কুল ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকিতে
আবুল কালাম আজাদ, ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের কারণে ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। এসব ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে, বিমে ফাটল ধরেছে, কোথাও কোথাও রড বেরিয়ে গেছে। যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, গফরগাঁওয়ে মোট ২৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ২৫টি বিদ্যালয় ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। তবে নতুন ভবন নির্মাণ বা সংস্কার কাজের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেক ক্ষেত্রে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে।
ভাতুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হক জানান, ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পর মাঠে ক্লাস নিতে হচ্ছে। আকাশে মেঘ দেখলেই আতঙ্কে ছুটি দিতে হয়। একই অবস্থা বারবাড়িয়া ইউনিয়নের পাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাজেরা আক্তার বলেন, “প্রতিদিনই আতঙ্ক নিয়ে ক্লাস করতে হয়। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও উদ্বেগে থাকেন।”
প্রতিবছর এসব ভবন সংস্কারের নামে লাখ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, ঠিকাদারদের অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে ভবনগুলো মেয়াদপূর্তির অনেক আগেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নূরে আলম ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে এবং কিছু ভবন নতুন করে নির্মাণের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ লুটপাটের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। এ বিষয়ে কারও কাছ থেকে অভিযোগ পাইনি।”
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গফরগাঁও উপজেলা প্রকৌশলী আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, অবিলম্বে জরাজীর্ণ ভবনগুলো সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সাংবাদিক মোঃ মিন্টু মিয়া কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত