সরিষাবাড়ীতে জমি নিয়ে বিরোধের চক্রান্ত ও মিথ্যা মামলায় হয়রানীর শিকার শাহীন শেখ পরিবার
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি :
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় গ্রামের মৃত আবুল হোসেন শেখের ছেলে শাহীন শেখ ও তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রের চক্রান্তে ্একই পরিবারের চাচা-ও চাচাত ভাইদের দ্বারা নানা চক্রান্ত ও মিথ্যা মামলা হয়রানির শিকার হয়ে আসছে। একই বংশের চাচাতো ভাইদের সঙ্গে ভূমি নিয়ে বিরোধে এ সব ঘটনা চলছে। গতকাল সরেজমিনে গিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, শাহীন শেখ এর পরিবার তারা বিএনপি সমর্থিত হওয়ায় স্থানীয় তৎকালীন ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ অনুসারীরা তাদের টার্গেট করেছে। আওয়ামী পন্থী আব্দুল হাকিম, মোস্তাফিজুর রহমান মজনু , হাফিজুর রহমান, টুকনুজ্জামান টুকন এবং সেনা সদস্য রাসেল শেখ প্রভাব খাটিয়ে নানা চক্রান্ত চালাচ্ছেন। সাজানো মামলা, মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও কোটি টাকার সম্পদ গড়ার ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে সংবাদকর্মীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। রিপন শেখের ছোট ভাই রুবেলের বসতবাড়ি নিয়েও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শাহীন শেখ পরিবারের অভিযোগ , উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বগারপাড় গ্রামের আব্দুল হাকিম শেখ এর ছেলে সেনা সদস্য রাসেল শেখ সেনা সদস্য হওয়ায় এর প্রভাব খাটিয়ে ইজমালি পুকুরপাড়ে লাগানো গাছ কোন কারণে নষ্ট হলে ওই নষ্টের দায় শাহীন শেখ এর পরিবারের ওপর চাপান এবং অকথ্য গালিগালাজ এবং নানা হুমকি প্রদান করেন। এছাড়া আব্দুল হাকিম এ পাশেই বসবাসকারী ফারুক শেখের বসতঘরের পাশে গোয়ালঘর ও রান্নাঘর নির্মাণ করে বসবাসের পরিবেশ দূর্বিসহ করে তুলেছেন। তাদের জমির সীমানা পেঁচিয়ে বসতঘরের ওয়াল নির্মাণ এবং পারিবারিক কবরস্থান দখল করে বাউন্ডারি ওয়াল দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
অভিযোগ আরও রয়েছে, শাহীন শেখের বাড়ির বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে শামীম শেখ যাতে বসতবাড়ি থেকে উত্তর ও দক্ষিণ দিকে বের হতে না পারেন, এজন্য আব্দুল হাকিম ও হাফিজুর রহমানের বাড়ির উভয় সীমানায় বেড়া দিয়ে ২১ দিন ৫টি পরিবারটিকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। এমনকি বসতবাড়ির দক্ষিণ পাশে হাফিজুর রহমান এর জমির রাস্তা দিয়ে ফসল আনা-নেওয়ার রাস্তা খোলাসা করার জন্য গ্রাম্য সালিশের সিদ্ধান্ত হলেও তা কার্যকর করা হয়নি।
সালিশের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা’র বিষয়ে ভুক্তভোগীরা জানান,শাহীন পরিবারের বিরুদ্ধে ভূমি পাবে এমন অভিযোগ এনে সেনা ক্যাম্পে মিথ্যা অভিযোগ দিলে সেনা ক্যাম্পের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি স্থানীয় ভাবে সালিশ-বৈঠকের মাধ্যমে সমাধানের নির্দেশ দেয়। পরে স্থানয়ি মাতাব্বর মামুন অর রশীদ ফকির, মনিরুজ্জামান, রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু ও প্যানেল চেয়ারম্যান লাল মিয়ার উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে সমঝোতা হলেও প্রতিপক্ষ আব্দুল হাকিম তা মেনে নেয়নি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক ও আজিজুর রহমান দুল্ল্যা জানান, শাহীন শেখদের পুকুরপাড়ে খুঁটি স্থাপন উভয় পক্ষের সম্মতিতেই হয়েছিল। সেখানে কোনো আপত্তি ছিল না, কিন্তু পরবর্তীতে প্রতিপক্ষ রাসেল শেখ সাংবাদিকদের মাধ্যমে মিথ্যা রটনা ছড়িয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ গ্রামবাসী জানান, শাহীন শেখের ভাই ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় আব্দুর রাজ্জাকের কাছ থেকে ভূমি কিনলেও প্রতিপক্ষরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে পত্রিকায় ৮ লাখ টাকায় বায়না হয়েছে বলে প্রচার চালায়।
অভিযুক্ত আব্দুল হাকিম শেখ ও মোস্তাফিজুর রহমান মজনু জানান, ইজমালি ভূমিতে কবরস্থান হিসেবে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছেন তারা। শাহীন শেখের বসতবাড়ির বাউন্ডারি ভেঙে রাস্তা তৈরি করেছেন বলেও স্বীকার করেন আব্দুল হাকিম শেখ। তিনি আরও বলেন, “আমি আমার পাওনা জমি পেয়েছি কিন্তু জমির কোন কাগজ বুঝে না দেওয়া পর্যন্ত কোনো আপোষ হবে না।”
ভুক্তভোগীর দাবি শাহীন শেখ বলেন, “আমরা নিরীহ মানুষ। আমার ছোট ভাই রিপন শেখ একটি সরকারী চাকুরী করেন বলে তাকে ঘিরে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হিংসার বশবতী হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য প্রকাশ ও অপপ্রচার বন্ধে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ চাই।”
প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে গ্রাম্য সালিশে থাকা স্থানীয় মাতাব্বর মামুন অর রশীদ ফকির, মনিরুজ্জামান, রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু ও প্যানেল চেয়ারম্যান লাল মিয়া জানান, সালিশে সমঝোতা হলেও প্রতিপক্ষরা সমাজের সিদ্ধান্ত মানছে না। ফলে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সাংবাদিক মোঃ মিন্টু মিয়া কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত