অভয়া আন্দোলনের প্রতিবাদী, চার ডাক্তারকে ডেকে পাঠালেন জিজ্ঞাসাবাদীর জন্য – বউবাজার থানা ।
রিপোর্টার, সমরেশ রায় ও শম্পা দাস ,কলকাতা , পশ্চিমবঙ্গ,
আজ ৩রা সেপ্টেম্বর বুধবার, ঠিক দুপুর দুটোই, মেডিকেল কলেজের এডমিনিস্ট্রেটিভ ব্লকের সামনে থেকে ডাক্তাররা এবং অভয়া আন্দোলনের নেতৃত্বরা একটি প্রতিবাদী মিছিল করলেন বউবাজার থানা পর্যন্ত, যেখানে চারজন কর্তব্যরত ডাক্তারকে ডেকে পাঠানো হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য।
জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরস ওয়েস্ট বেঙ্গল এবং অভয়া মঞ্চের আহবানে, প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন ডাক্তার ও অভয়া মঞ্চের আন্দোলনকারীরা, একত্রিত হয়ে সেন্ট্রাল এভিনিউ ধরে বউবাজার থানায় পৌঁছান, তাদের স্লোগান ছিল জাস্টিস ফর আর জি কর, অভয়ার ন্যায় বিচার। এবং যতদিন না সত্য সামনে আসবে অভয়ার ন্যায় বিচার পাবে, তারা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, প্রশাসনিক ধুমকি চুমকিতে ভয় পায় না, যতখুশি ডাক্তারদের ডেকে থানায় নিয়ে যাক তবুও তাদের আন্দোলন থামাতে পারবে না।
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন পূর্ণচন্দ্র গুইন, উৎপল ব্যানার্জি সহ অন্যান্যরা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন , যাহাদেরকে বউবাজার থানায় বিনা কারণে, বারবার হ্যারাসমেন্ট করা হচ্ছে, ডেকে পাঠানো হচ্ছে, তাহারা হলেন।
অধ্যাপক মানস গুমটা, ডাক্তার সুবর্ণ গোস্বামী, ডাক্তার দেবাশীষ হালদার, ডাক্তার পরিচয় পান্ডা।
প্রতিবাদী মিছিল বউবাজার থানার সামনে পৌঁছালে, ডাক্তাররা এবং অভয়া মঞ্চের নেতৃত্বরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন, তাহারা পুলিশকে তিরস্কার করেন, বিনা কারণে কর্তব্যরত ডাক্তারদের যেভাবে হ্যারাসমেন্ট করা হচ্ছে, এটা দেশের লজ্জা, কারণ যে সময় ডাক্তাররা দশটা রোগীর সেবা করত সেই সময় পুলিশ তাদের ডেকে পাঠাচ্ছেন। রোগীরা পরিষেবা পাচ্ছে না, এর চাইতে বড় লজ্জা কিসের, আর আপনারা যদি ভেবে থাকেন বারবার ডাক্তারদের ডেকে ধমকিয়ে চমকিয়ে দোলন থামাবেন, তাহলে আপনারা ভুল করছেন, আমরা কোন অন্যায় করিনি যে আপনাদের ধমকানো চমকানোই আমরা ভয় পাবো, পারলে আরো ডাক্তারদের ডেকে পাঠান, আর একটা কথা বোঝা গেল, আপনারা আমাদের ডেকে আরো ভালো করছেন, আপনারা যে ভয় পেয়ে আমাদের ডাকছেন সেটা পরিষ্কার, কারণ আপনারা তো ধর্ষণকারী গুন্ডাদের ধরতে পারেন না, তাদের সাজা দিতে পারেন না, এক বছর হয়ে গেল অভয়া দোষীদের খুঁজে বার করতে পারলেন না, এখন ডাক্তারদের ডেকে তাদের মনোবল কে আরো শক্ত করে দিলেন, এরকম মাঝে মাঝে ডাকলে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে, তাহারা জানান লালবাজারে একটি চিঠিও তারা দেবেন, বউবাজার থানা থেকে কয়েকজন প্রতিনিধি দল লাল বাজারে পৌঁছান।
যে চারজন ডাক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য বউ বাজার থানা ডেকে পাঠিয়েছিলেন, তাহাদের মধ্য থেকে অধ্যাপক মানুষ গুমটা ও ডাক্তার দেবাশীস হালদার, উভয়েই বলেন, আমাদের ডেকে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে যেটুকু জানা গেলো, আমাদের কে ভয় দেখানোর চেষ্টা, ধমকে চমকে আমাদেরকে বিনা কারণে স্বীকার করানোর চেষ্টা, আর বলেন আমরা যেদিন আন্দোলন করেছি, সেইদিন নাকি কোন পারমিশন ছিল না, আমরা একটা কথাই বলেছি, আমরা মিছিলে যোগ দিয়েছি, পারমিশন ছিল কি ছিল না এটা আমাদের জানার কথা নয়।, একটা ন্যায় বিচার পাবার জন্যই সবাই পথে নেমেছিল, আর যদি পারমিশন নাই থাকে, তাহলে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমেছিল, হাজার হাজার মানুষ মিছিলে পা মিলিয়ে ছিল, তাহলে সবাইকেই এরেস্ট করুন নাম ধরে ধরে, সবাইকে ডেকে পাঠান, ওই দিনের মিছিলে যারা ছিল, আসল কথা আপনাদের এটা অজুহাত, আপনারা এই আন্দোলনকে স্তব্ধ করার জন্যই আমাদেরকে ভয় দেখাতে থানায় ডেকেছেন, তো আমরা এতোটুকু বিচলিত নয়, যত ডাকবেন তত আন্দোলন বাড়বে, তবুও আমাদের আন্দোলন বন্ধ করতে পারবেন না, তাই বিচার যতদিন না হচ্ছে, তা না হলে এক বছর আগেকার ঘটে যাওয়া মিছিল, এক বছর বাদে আপনাদের ডাকাত তলব পরল , অথচ এক বছরে, একটা দোষীকে ধরতে পারলেন না, চিহ্নিত করতে পারলেন না, তাই বেছে বেছে ডাক্তারদের ডেকে পাঠাচ্ছেন। কোন আরো বেশি করে ডাকুন, আমরা সাংবাদিকদের সামনে যা বলেছি আপনাদের কেউ তাই বলবো। তবুও আমাদের কণ্ঠ রোধ করতে পারবেন না
অধ্যাপক মানুষ ঘুমটা জানান, কালকের থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে, বউবাজার থানা ডেকে পাঠানোর আমাকে বাধ্য হতে হয়েছে আসতে। আমি আজকেই বাঁকুড়া ফিরে যাব।, কারণ কালকেও পরীক্ষা আছে, আর আমার মেয়েরও শরীর খারাপ, সমস্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু ধরা পড়েছে, বাবু আমাকে সব দায়িত্ব ছেড়ে হাজিরা দিতে আসতে হয়েছে, এসে যেটুকু জানলাম, আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে কন্ঠ অবরোধ করতে চেয়েছেন, এটাই মূল বিষয়, তো সেটা কোনদিনও পারবেনা, আমরা ১৪ই আগস্ট প্রতিজ্ঞা করেছি, অভয়ার ন্যায় বিচার যতদিন না হবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো, অন্য কিছুতেই আমাদের আন্দোলন বন্ধ করতে পারবে না, কত ডাক্তারের নামে কেস দেবে দিক। আমরাও দেখতে চাই।