ছাত্র আন্দোলনের ৮৯ তম প্রতিষ্ঠা, পুলিশকে হুঁশিয়ারী দিলেন। এস এফ আই ছাত্র সংগঠন।
রিপোর্টার, সমরেশ রায় ও শম্পা দাস , কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ,
আজ ১২ই আগস্ট মঙ্গলবার, ঠিক বিকেল তিনটায়, বৃষ্টি থামার পরেই, কলকাতা এসএফ আই ছাত্র সংগঠন, একটি র্যালি নিয়ে রাসবিহারী মোড় থেকে যখন হাজরা মোড়ের এগোতে থাকেন, তখন পুলিশ প্রশাসনের অফিসারেরা কালীঘাট তোড়নের সামনে তাদের মিছিল আটকে দেন এবং রাস্তার উপর পরপর চারটি প্রিজন ভ্যান দাঁড় করিয়ে দেন যাতে মিছিলে এগোতে না পারে, সাথে সাথে এস এফ আই এর কর্মীরা ও উদ্যোক্তারা পুলিশ অফিসারের কাছে জানতে চাইলে, কী কারণে রাস্তা বন্ধ করা হলো ও মিছিল বন্ধ করা হলো , কোন সদ উত্তর মেলেনা, বারবার একটা কথাই তাদেরকে বলছেন , মিছিল এর বেশি এগুলো যাবে না, যদি এগোন তাহলে আইনত ব্যবস্থা নেবো।
জানা যায় আর ছাত্র আন্দোলনের অনুষব্বিতম প্রতিষ্ঠা দিবসে হাজরা মোড়ে একটি শান্তিপূর্ণ সভা করার কথা ছিল। প্রশাসনকে জানিয়েও ছিলেন, কিন্তু প্রশাসন কোনোভাবেই পারমিশন দেননি, কিন্তু তারা চ্যালেঞ্জ করেছিলেন প্রশাসন যদি আমাদের পারমিশন না দেন তবুও আমরা আজকের দিনে সভা করবো হাজরা মোড়ে। এবং বেশ কয়েকটি দাবি নিয়েই তাদের এই সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল।
রাস্তা আটকে দেওয়ার ফলে এবং কোন সদ উত্তর না পাওয়ায় এসএফআইয়ের ছাত্ররা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা সরাসরি বলেন আমরা রাস্তা অবরোধ করি না আপনারাই ইচ্ছে করে প্রিজন ভ্যান আটকে রাস্তা অবরোধ করেছেন, অবিলম্বে যদি রাস্তাতিকে প্রিজন ভ্যান গুলি সরিয়ে না দেন, আমরা বাধ্য হবো রাস্তার মাঝে সমস্ত আটকে সভা করতে, এর সাথে সাথে সাথে অফিস অফিসারদের তরফ থেকে এসএফআই কর্মীদের বলা হয় আপনারা রাস্তার উপর ১৫ মিনিটের বেশি আটকে রাখার সময় পাবেন না, যদি আটকান ও রাস্তা অবরোধ করে রাখেন, আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব, এসে প্রায় ছাত্র সংগঠন পরিষ্কার জানিয়ে দেন, আপনারা যদি আমাদের সাথে সহযোগিতা না করেন, এবং যদি রাস্তা থেকে প্রিজন ভ্যান না সরিয়ে নেন, আমরা রাস্তা বন্ধ করে এখানেই সমাবেশ করব।, এবং আমরা ১৫ মিনিট মানবো না, আপনাদের কিছু করার থাকে করবেন, এস এফ আই ছাত্রদের কথায় বাধ্য হয়েছেন রাস্তার উপর থেকে প্রিজন ভ্যান সরিয়ে নিতে পুলিশ অফিসারেরা, তারপর তারা তাদের রাস্তার একপাশে জমায়েত হয়ে সমাবেশ করলেন।
সমাবেশ শুরুর আগে এস এফ আই এর ছাত্র-ছাত্রীরা, ৮৯ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন।
এরপর এক একে একে বক্তব্য রাখতে গিয়ে, প্রশাসনকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন, এবং তাদের দাবীগুলি তুলে ধরলেন।
এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, এস এফ আই রাজ্য সম্পাদক কমরেড দেবাঞ্জন দে, এস এফ আই জেলা সম্পাদক কমরেড দিধিতা রায়, এস এফ আই জেলা সভাপতি কমরেড বর্ণনা মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা।
তাহাদের দাবী অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে।, অবিলম্বে অবৈধ ইউনিয়ন পরিচালনা বন্ধ করতে হবে, কলেজ ক্যাম্পাসে দুষ্কৃতীরা আজ বন্ধ করতে হবে,
এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে, তারা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কোন আইন আছে, কালীঘাটের শাসন চলছে, কলেজ ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে তৃণমূল গুন্ডারা রাজত্ব করছে, ভেবেছিলেন প্রশাসন আমাদেরকে আটকে রাখবে, আগেও কোনদিন পারেনি, এখনো পারবেনা, আজ আমাদের পথ আটকেছে, কিন্তু আজকে যে সকল অফিসারেরা আমাদের পথ আটকেছেন, তাহাদের স্মরণ করিয়ে দিই, আবার আমরা হাজরা মোড়ে আসবো।, সভা করো, আশুতোষ কলেজের গেটে আন্দোলন করবো, ভেতরেও ঢুকবো, ক্ষমতা থাকলে আটকে দেবেন, শুধু তা নয় প্রশাসনের অফিসারদেরকে নির্লজ্জ পুলিশ অফিসার বলে ধিক্কার জানিয়েছেন।, এমন কি তাহারা জানান, একুশে জুলাই থেকে ২৮ শে জুলাই আপনারা এই সকল অফিসারদের ছবি তুলে রাখুন, দেখতে পাবেন তৃণমূলের কথায়, মেয়ো রোডে ঝাঁড় দিচ্ছে। তাই এনারা ছাত্র-ছাত্রীদের মর্ম বোঝেনা, যদি বুঝতো, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের ছেলেমেয়েদের কি হবে, আদ্যো কলেজে পড়তে পারবে কিনা, পড়ে চাকরি পাবে কিনা বুঝতো, কারণ বুঝবে কোথা থেকে, আপনারা কালীঘাটের কোথায় চলেন, তাই আবারো অভয়ার মায়ের গায়ে হাত তুলেছে, যারা মেয়ের প্রকৃত বিচার চাইতে এসেছিল , এই সকল পুলিশ অফিসারদের জন্য কেউ বিচার পায় না, কারো শাস্তি হয় না, তাই উনাদের স্মরণ করিয়ে দিই, ছাত্র আন্দোলনের নেতা , ছাত্র আন্দোলন করতে গিয়ে সুদীপ্ত প্রাণ দিয়েছিল, কিন্তু দমিয়ে রাখতে পারেনি, শতশত সুদীপ্ত তৈরি হয়েছে, তাই ভয় দেখিয়ে , চমকিয়ে আমাদেরকে জব্দ করতে পারবেন না, আপনাদেরও বাড়িতে ছেলে-মেয়ে আছে, তাই একটু ভাবতে শিখুন, একদিন আপনার বাড়ি ছেলেমেয়েদের কি ঘটতে পারে,
তাই আবারও বলছি, সাবধান হন, কালীঘাটের রাজত্ব বন্ধ করুন, কালীঘাটের শাসন বন্ধ করুন, ছাত্র ছাত্রীদের পাশে থাকুন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে থাকুন, তবেই আপনারো ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠবে, আর আমরা কিভাবে কলেজ থেকে দুষ্কৃতি ও তৃণমূল গুন্ডাদের শায়েস্তা করতে হয় জানি, প্রতিটি কলেজে কলেজে আমরা আন্দোলন করবো, তৃণমূল শাসকদের কলেজ থেকে বের করবো, আজ আমরা ৮৯ তম ছাত্র আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ সভা করে গেলাম।