সরিষাবাড়ীতে শিক্ষার্থী ফেরানোয় প্রধান শিক্ষক হেলেনা খাতুন হুমকির মুখে
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি:
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ৭০ নং বারইপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলেনা খাতুন শিক্ষার্থীদের কিন্ডারগার্টেনমুখী প্রবণতা রোধে উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানের ভিতর ও বহিরাগতদের হুমকি ও অপ-প্রচারের শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, বারইপটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইয়াসমীন নাহার হ্যাপি তার স্বামী ইমরান হোসেন বাবু ‘চন্দ্র বিন্দু কিন্ডার গার্টেন’-এর পরিচালক হওয়ায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত মেধাবী শিক্ষার্থী প্রলোভন দেখিয়ে ওই কিন্ডার গার্টেন স্কুলে শিক্ষার্থী পাঠান। প্রধান শিক্ষক তার বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেনীর ছাত্রী তোয়া মনি কে ফেরত আনেন। এ নিয়ে শুরু হয় নানা ষড়যন্ত্র। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুরে প্রধান শিক্ষক হেলানা খাতুন ও তার পরিবার পরিজন এ অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাহিদা ইয়াসিন ও সহকারী শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং এঘটনার অন্তরায় অবগত আছেন বলে জানান তারা।
সম্প্রতি গত ২২ শে জুন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় লাগানোর জন্য বিভিন্ন প্রজাতির পাঁচটি চারা গাছ লাগানোর বিদ্যালয় কর্তপক্ষকে প্রদান করেন। বিদ্যালয়ের দখলীয় ৫৩ শতাংশ জমি সংক্রান্ত জটিলতায় গাছ লাগাতে বিদ্যালয়ের জমি দাতা ফজলুল হক এর সাথে সমন্বয় করে গত ৮ জুলাই বেলা সাড়ে ১২ টায় দিকে গাছ লাগানোর প্রস্তুতি গ্রহন করেন। এ সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কতিপয় ষড়যন্ত্রকারীরা ক’জন রিপোর্টার কে ডেকে এনে গাছ লাগানো বিলম্বিত হওয়ার অভিযোগ আনেন। এ সময় ভাটারা ইউনিয়ন বিএনপি’র সহ-সভাপতি আসলাম হোসেন বাচ্চু, ইমরান হোসেন বাবু, তারা প্রামাণিক, তোতা মণ্ডলসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে চারা গাছ বিনষ্ট হওয়ার সংবাদ প্রকাশ করেন। যা হেলেনা খাতুন এর মানহানি ঘটায়। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় একটি কুচক্রী প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় মনগড়া একটি সংবাদ পরিবেশন করান। ওই প্রকাশিত সংবাদটি একটি মহল ফেসবুকে শেয়ার দেন। যা অত্যন্ত মানহানিকর বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান শিক্ষক।
এছাড়া বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণে জমি সংক্রান্ত বিরোধ অভিযোগ এনে স্থানীয় নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে আদালতে মামলা করায় কাজ বন্ধ রয়েছে। একটি মহলের নানা হুমকিতে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে এবং প্রধান শিক্ষক এর পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় হুমকির মুখে রয়েছেন বলে দাবি করেন হেলেনা খাতুন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইয়াসমীন নাহার হ্যাপি ও তার স্বামী ইমরান হোসেন বাবু এটিকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছেন। তবে জানা গেছে, ইমরান হোসেন ু বাবু একজন কলেজের শিক্ষক হলেও নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে ভেকু দিয়ে মাটি খনন ও বিক্রির ব্যবসায় লিপ্ত থাকেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
প্রধান শিক্ষক ও তার পরিবার পরিজন কুচক্রী মহলের নানা ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও নিরাপত্তা দাবী করেছেন।