নড়াইলের লোহাগড়ায় আ’লীগ নেতার নেতৃত্বে বিএনপি নেতাদের বাড়িঘর ও অফিস ভাঙচুর।
শেখ ফসিয়ার রহমান নড়াইল জেলা প্রতিনিধি!!
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য নাশকতার মামলার আসামি মিজানুর রহমান খোকন চৌধুরী ও তার ছেলে স্বনীল চৌধুরী সোহাগের নেতৃত্বে উলা গ্রামে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, দলীয় অফিস ভাঙচুর এবং বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা কেটে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (২৭ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ঘুম থেকে ওঠার আগেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে নড়াইলের লক্ষীপাশা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য অহিদ শেখ, তার বড় ভাই শহিদ শেখ এবং ইন্তা ফকিরের বাড়িতে হামলায় চালিয়ে পাকা দালান, টিনের বসত ঘর, বাথরুম, রান্না ও গোয়াল ঘর ভেঙ্গেচুরে তচনচ করে দিয়েছে। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন। এরা হলেন-রানা শেখ (২৮), সোহরাব মোল্যা (৫০), খাইরুল শেখ (২৫) ও রাব্বি (২০)। এদিকে, হামলা ও ভাঙচুরের পর নড়াইলের উলা গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
অহিদ শেখের স্ত্রী নূরজাহান বেগম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় ঘরের আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক মিটার ও বোর্ড, ফ্যান, ধান, চালসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভেঙ্গেচুরে নষ্ট করে দিয়েছে। বাড়ির উঠান এবং আশেপাশের পেয়ারা, আমসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা কেটে দিয়েছে।
উলা গ্রামের শহিদ শেখ বলেন, আমি মারামারি গন্ডগোল পছন্দ করি না। রোববার সকালে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের বাড়িঘরে হঠাৎ করে হামলা চালায়। ঘরের চালায় উঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে টিন কেটে ফেলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। দালান ঘরের টাইলস ভেঙ্গে দিয়েছে।
লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়ন বিএনপি’র সদস্য ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ ওহিদুর রহমান জানান বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু,লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রুনু সিকদার এর ছত্রছায়ায় লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নসহ অত্র এলাকায় ক্ষমতার প্রভাবে আধিপত্য বিস্তারকারী লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সভাপতি মিজানুর রহমান খোকন ও তার ছেলে স্বপ্নীল চৌধুরী সোহাগকে বর্তমানে লোহাগড়া উপজেলার কিছু বিএনপি র নেতা প্রশ্রয় দিচ্ছেন,সেই কারণে তারা আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। মিজানুর রহমান খোকন ও স্বপ্নীল চৌধুরী সোহাগ পিতা পুত্র জুলাই গণ হত্যা মামলার আসামি, যাত্রা বাড়ি থানার মামালা নং ৬৬ এবং ১৬ ও১৭ নং আসামি। এছাড়া লোহাগড়া থানার একাধিক নাশকতা মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও লোহাগাড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র ও লক্ষীপাশা ইউনিয়নে লোকজন তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। বাড়িতে দাওয়াত করে খাওয়াচ্ছেন। অথচ তাদের দ্বারা স্বৈরাচারী সরকারের আমলে আমরা নির্যাতিত হয়েছি এখনো আবার নির্যাতিত হচ্ছি।
তারা বর্তমানে বিএনপি নেতাদের উপর ভর করেছে এবং বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে । স্বপ্নীল চৌধুরী ও তার বাবা আওয়ামী লীগ আমলেও প্রভাব বিস্তার করেছে এখনো এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছে।আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনকে জানাতে চাই এবং আমার জীবনের নিরাপত্তা চাই।
উলা গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষ বলেন, মিজানুর রহমান খোকন চৌধুরী আমাদের গ্রামটা (উলা) অশান্ত করে দিচ্ছে। নাশকতা মামলায় কিছুদিন জেলখানায় থেকে জামিন পেয়ে খোকন চৌধুরী বাড়িতে এসে আবার অশান্তি সৃষ্টি করছেন।
এদিকে, হামলা ও ভাঙচুরের পর অভিযুক্ত খোকন চৌধুরীসহ তার লোকজন পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ###